যে ১০টি অভ্যাস আপনার ব্যর্থতার কারণ
পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি, নাকি ভাগ্য! আপনার ধারনা কি? জীবনে সফলতার জন্য ভাগ্য লাগে, নাকি জীবনে সফলতার
জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। অনেকেই ধারণা করেন যে, জীবনে সফলতার জন্য ভাগ্যই একমাত্র শক্তি। তবে, এই কথাটি শুধু একটি ভ্রান্ত-ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। ভাগ্যের সাথে সফলতার কোন সম্পর্ক নেই। মানুষের জীবনের সফলতা তার দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাস ও মনোভাব এর
উপরই নির্ভরশীল। তাই আপনি যদি জীবনে সফল হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে এবং সঠিক পথে চলতে হবে। আপনি মানুষটি কেমন, তা অনেকটাই বোঝা যাবে আপনার কয়েকটি অভ্যাস কিংবা স্বভাব বিচার করে। যদি অতীতে ব্যর্থ হয়েও দমে না যান, তাহলে
বুঝতে হবে আপনি মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী। আর যদি দমে যান, তাহলে মূল্যায়নটা হবে বিপরীত। স্বাভাবিকভাবে কেউই চায় না ব্যর্থ হতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি খারাপ স্বভাবের কারণেই একজনের নামের সঙ্গে ব্যর্থতার তকমা লেগে যায়। তাই এখানে এমন ১০টি অভ্যাস
তুলে ধরব, যে ১০টি অভ্যাস হয়তো আপনার ব্যর্থতার কারণ...!
১ পুর্ব পরিকল্পনায় ব্যর্থতা |
---|
জীবনে যে কোন লক্ষ্যে পোঁছানোর জন্য একটি দুরদর্শি পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক। পরিকল্পনা করতে পরিস্থিতি সব সময় আপনার মনের মত হতে হবে এমন কোন কথা নেই। কোন একটি উদ্দ্যেশ্য হাসিলের জন্য আগে থেকেই একটি পরিকল্পনা থাকলেই তো গন্তব্যে পৌঁছতে মনের জোর বেড়ে যায়। আর এই মনের জোর আপনাকে আপনার গন্তব্যে পোঁছতে সহযোগি ভূমিকা পালন করবে। তবে পরিকল্পনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যটা মোটামুটি পরিষ্কার থাকতে হবে। এবং পরিকল্পনা মাফিক পরিশ্রম করার মানুষিকতা থাকতে হবে। না হলে ব্যর্থতা নিশ্চিত। |
২ এগিয়ে যেতে ভয় |
---|
অনেকেই এমন আছেন যারা পরিকল্পনা ঠিকই করেছেন, কিছুটা কাজও করেছেন। কিন্তু, "যদি ব্যর্থ হই" এই ভয়ে সামনে পা বাড়ানোর সাহস পাই না। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভাবনা নিশ্চিত না হয়েও অনেক সময় চেষ্টা করে দেখতে হয়। কারণ, জীবনে অনেক কিছুই আছে, চেষ্টার আগে যার সম্ভাবনা চোখে পড়ে না। |
৩ দ্রুত হাল ছেড়ে দেওয়ার স্বভাব |
---|
আপনার চারিপাশে অনেক সফল মানুষকে আপনি দেখেছেন অথবা সফল মানুষদের গল্প শুনে আপনিও সফল হবার মনোস্থির করে কাজে নেমে পড়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কিছু ব্যর্থতায় আপনার মনোবল ভেংগে যায়। নিজের উপর আপনি আর বিশ্বাস রাখতে পারছেন না, তাই দ্রুত হাল ছেড়ে দিয়েছেন। লক্ষ্যে পৌঁছতে ছোটখাটো ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা হতেই পারে। কিন্তু এর ভিত্তিতে চূড়ান্ত ব্যর্থতা মেনে নেওয়া দুর্বল মনের পরিচায়ক। |
৪ আত্ববিশ্বাসের অভাব |
---|
জীবনে যা কিছুই করেন না কেন, কাজের প্রতি মনোবল তখনই বাড়বে যখন কাজটিকে নিয়ে আপনার সম্পূর্ন আত্ববিশ্বাস থাকবে। "আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না" এই ধরণের মন মানুষিকতা নিয়ে যা করছেন এখানেই ক্ষান্ত দিন। যে কাজে ঘাম ঝরাচ্ছেন, তা অর্জন করতে পারবেন বলে প্রত্যয় না থাকলে ব্যর্থতা সামাল দেওয়া অসম্ভব। যারা সফল হয়েছেন, ওরা কিন্তু অনেক ব্যর্থতা সামাল দিয়ে, একদিন সফল হবেন বলে অবচেতন মনে এক ধরনের বিশ্বাস নিয়ে কাজ করে আজ সফল হয়েছেন। এই অনুভূতির অভাবেই আপনি হয়তো সফলতার পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। |
৫ বাজে অজুহাত দাঁড় করানো |
---|
অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু হচ্ছে না, অনেক সময়ের দরকার আমি পারছি না। "মানুষ তো ব্যর্থ হয়" আমিও না হয় ব্যর্থ হলাম। ব্যর্থতা থেকেই বাস্তবিক শিক্ষা পায় মানুষ। যার মধ্যে ব্যর্থতা মেনে নেওয়ার মানসিকতা নেই, সে সফলতা আশা করতে পারে না। এই ধরণের চিন্তা একটি মারাত্বক বাজে অভ্যাস। এই ধরণের অজুহাত দেখানো মানে আপনি আপনার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। অপারগতা স্বীকার দুর্বল মানুষের লক্ষণ। এমন অভ্যাস আপনাকে কোনদিন সফল হতে দেবে না। |
৬ ঘুমানোর পূর্বে ডিভাইস ব্যবহার |
---|
সারাদিনের প্রচুর ক্লান্তির পর রাতে যদি ভাল ঘুম না হয়, তবে পরবর্তী দিনটি আপনার জন্য কখনোই সুখকর হবে না। কোন কাজে আপনার মনোযোগ বসবে না। আর আজকাল অধিকাংশ মানুষ অভিযোগ করেন যে তাদের রাতে ঘুম আসে না। অথচ ঘুম না আসার প্রধান কারণ হচ্ছে ঘুমানোর আগে ফোন বা কম্পিউটার ইত্যাদী ব্যবহার করা। কম্পিউটার বা ফোনের নীল আলো আপনার ঘুম নষ্টের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে যা আপনি বুঝতেও পারেন না। |
৭ “না” বলতে দ্বিধা |
---|
পৃথিবীতে অনেক মানুষ এমন আছে যারা জীবনে অনেক বার ব্যর্থ হয়েছেন কারণ যেখানে না বলা প্রয়োজন সেখানে হ্যাঁ বলেছেন বলে। “না” এমন একটি শক্তিশালী শব্দ যা আপনাকে অনেক সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে। যেমন ধরুন, আপনার বন্ধু আপনাকে একটি সিগারেট দিয়ে বলেছে এই নাও খেয়ে দেখ। আপনি না বলতে পারেন নি। সুতারাং আপনি ওখানেই ব্যর্থ হয়েছেন। অনেক বুদ্ধিমান লোকেরা “না” এর বদলে “আমার মনে হয় না, আমি পারব” বা “আমি নিশ্চিত নই” মত শব্দগুলো ব্যবহার করেন। যদি কোন প্রতিশ্রুতি দেয়ার আগে মনে হয় আপনি পারবেন না, তবে সেখানে অযথা ‘হ্যাঁ’ বলার দরকার নেই। সফল হতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে “না” বলা শিখুন। |
৮ অযথা সময় নষ্ট করা |
---|
কিছু কিছু মানুষ কাজ শুরু করার আগেই চিন্তা করে তাদের একাজ সফল হবে কিনা। সফল না হলে কি হবে! এইসব ভাবতে ভাবতে অযথা দ্বীর্ঘ সময় নষ্ট করে। অনেকে আবার চিন্তা করে যেহেতু এই কাজে সফল হওয়া যাবে না, তাই অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না। এমন ধারনা আপনাকে কখনোই সফল হতে দেবে না। তাই সফলতার জন্য অপেক্ষা না করে নিজের কাজ গুলোকে চালিয়ে যান। চেষ্টা, শ্রম এবং মেধার যথাযথ প্রয়োগ করুন। আর কখনোই ব্যর্থতা আসার পূর্বে ব্যর্থ হবে না। |
৯ সবজান্তা মনোভাব |
---|
আমরা জানি, শিক্ষার কোন বয়স হয় না। এবং শিক্ষা ছোট বড় সবার কাছ থেকে নেওয়া যায়। অনেকেই এমন আছেন যারা নিজেকে সবজান্তা মনে করেন এবং অন্য কারো কাছ থেকে শিখতে লজ্জাবোধ করেন। এমন অভ্যাস জীবনে সফল না হবার একটি অন্যতম কারণ। এই অভ্যাসের মানুষেরা ভিতরে ভিতরে অনেক কিছু করার চেষ্টা তো করেন কিন্তু অতি সহজে হতাস হয়ে পড়েন। এরা নিজেরাই তো কোনদিন সফল হতে পারেন না, তাই এরা অন্যর ব্যর্থতা আশা করেন। |
১০ সমালোচনা করা |
---|
সমালোচনা একটি মারাত্মক খারাপ অভ্যাস। প্রত্যেক ধর্মে পরনিন্দা এবং গীবত নিষিদ্ধ। প্রতিনিয়ত একজনের দোষ ত্রুটি অন্যের নিকট বর্ণনার দ্বারা আপনার মূল্যবান সময়ের যেমন অপচয় হয়, তেমনি একটা সময় এসে আপনার নিজের ভাল কাজের প্রতিও আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। আপনার নিজের কাছেও মনে হবে অন্য কেউ আপনার কাজের সমালোচনা করছে। প্রত্যেক মানুষের অসংখ্য ভাল দিক রয়েছে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। এর ফলে আপনার মধ্যেও ইতিবাচক চিন্তা চেতনা তৈরি হবে। এবং এমন ভাল চিন্তা চেতনা আপনাকে সকল ব্যর্থতা কাঠিয়ে সফল হতে সাহায্য করবে। |

রঙ করা শিখুন

এইচটিএমএল আইকন

ওয়েবের যত ফন্টস

সিএসএস এনিমেশন

হরেক রকম মেনু

সিএসএস নকশা
